ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-কমার্সে প্রতারণা বন্ধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১
  • ১৫১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে মনিটর করতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনে ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো, ২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় এ নির্দেশ দেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু উদ্যোক্তা ই-কমার্সের নামে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অনলাইনে এক ধরনের পণ্য প্রদর্শন করে ডেলিভারি দিচ্ছে নিম্নমানের  বা অন্য পণ্য। অনেক সময় অর্ডার নিয়ে পেমেন্ট পাওয়ার পর পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। ফলে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে, অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহ হারাচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু লোকের প্রতারণার জন্য যাতে ই-কমার্সের মতো একটি বিপুল সম্ভাবনাময় খাতের প্রসার কোনোভাবে থেমে না যায়, তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটর করতে হবে।

ই-কমার্সের ওপর ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, করোনার কারণে অনেক ক্রেতা ঘরে বসে তাদের পছন্দের প্রয়োজনীয় পণ্যটি পেতে চান। ফলে অনলাইনে কেনাকাটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ই-কমার্স এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক খাত। ই-কমার্সের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এ আগ্রহ ধরে রাখতে হলে ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে সাইবার ক্রাইমের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় নানা ইস্যুতে সামাজিক অস্থিরতাও দেখা দেয়। তাই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

তথ্যপ্রযুক্তির কারণে এই করোনাকালেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মহামারিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবার প্রয়োজন আমরা নতুন আঙ্গিকে উপলব্ধি করতে পেরেছি। বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবে যখন স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম তখন তথ্যপ্রযুক্তিই হয়ে ওঠে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র নির্ভরশীল মাধ্যম। দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং সেবা প্রভৃতি হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। চলমান মহামারিতে তথ্যপ্রযুক্তির স্থানীয় বাজার অকল্পনীয়ভাবে প্রসার লাভ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প আরও এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপ্রতি বলেন, দেশের বিপুল শ্রমশক্তিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প এগিয়ে নিতে হবে। আইসিটিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। দেশে এখন স্যামসাংয়ের উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্টফোন, সনির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অ্যান্ড্রয়েড টিভিসহ বেশ কয়েকটি হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা ডিজিটাল ডিভাইস তৈরির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের যে সাহস দেখিয়েছেন, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের আইসিটি খাতে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জনে তাদের আরও সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন আমাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শক্তি ও সাহস জোগাচ্ছে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা এখন তৈরি করছে রোবোটসহ নানা সমগ্রী। বাংলাদেশের তরুণরা আন্তর্জাতিক রোবোটিকস ও ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে সম্মানজনক ফল অর্জন করছে। এসব মেধাবী তরুণকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন, প্রসার ও ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বের বুকে একটি উন্নয়নশীল দেশের মডেল হিসাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ই-কমার্সে প্রতারণা বন্ধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

আপডেট টাইম : ১০:২২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে মনিটর করতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনে ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো, ২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় এ নির্দেশ দেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু উদ্যোক্তা ই-কমার্সের নামে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অনলাইনে এক ধরনের পণ্য প্রদর্শন করে ডেলিভারি দিচ্ছে নিম্নমানের  বা অন্য পণ্য। অনেক সময় অর্ডার নিয়ে পেমেন্ট পাওয়ার পর পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। ফলে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে, অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহ হারাচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু লোকের প্রতারণার জন্য যাতে ই-কমার্সের মতো একটি বিপুল সম্ভাবনাময় খাতের প্রসার কোনোভাবে থেমে না যায়, তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটর করতে হবে।

ই-কমার্সের ওপর ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, করোনার কারণে অনেক ক্রেতা ঘরে বসে তাদের পছন্দের প্রয়োজনীয় পণ্যটি পেতে চান। ফলে অনলাইনে কেনাকাটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ই-কমার্স এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক খাত। ই-কমার্সের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এ আগ্রহ ধরে রাখতে হলে ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে সাইবার ক্রাইমের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় নানা ইস্যুতে সামাজিক অস্থিরতাও দেখা দেয়। তাই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

তথ্যপ্রযুক্তির কারণে এই করোনাকালেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মহামারিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবার প্রয়োজন আমরা নতুন আঙ্গিকে উপলব্ধি করতে পেরেছি। বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবে যখন স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম তখন তথ্যপ্রযুক্তিই হয়ে ওঠে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র নির্ভরশীল মাধ্যম। দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং সেবা প্রভৃতি হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। চলমান মহামারিতে তথ্যপ্রযুক্তির স্থানীয় বাজার অকল্পনীয়ভাবে প্রসার লাভ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প আরও এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপ্রতি বলেন, দেশের বিপুল শ্রমশক্তিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প এগিয়ে নিতে হবে। আইসিটিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। দেশে এখন স্যামসাংয়ের উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্টফোন, সনির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অ্যান্ড্রয়েড টিভিসহ বেশ কয়েকটি হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা ডিজিটাল ডিভাইস তৈরির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের যে সাহস দেখিয়েছেন, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের আইসিটি খাতে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জনে তাদের আরও সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন আমাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শক্তি ও সাহস জোগাচ্ছে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা এখন তৈরি করছে রোবোটসহ নানা সমগ্রী। বাংলাদেশের তরুণরা আন্তর্জাতিক রোবোটিকস ও ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে সম্মানজনক ফল অর্জন করছে। এসব মেধাবী তরুণকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন, প্রসার ও ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বের বুকে একটি উন্নয়নশীল দেশের মডেল হিসাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।